আর্থ্রাইটিস থেকে পুরোপুরি মুক্তি না পেলেও নতুন চিকিৎসা পদ্ধতিতে দীর্ঘকালের জন্য বেদনা দূর হতে পারে। রোগী আর্থ্রাইটিসের কারণে প্রচন্ড হাঁটুর ব্যথায় ভোগেন এমন রোগীরা রোবোটিক অ্যাসিস্টেড নী সার্জারির (আরটিকেআর) দ্বারা স্বল্পসময়ে বেদনামুক্ত হতে পারেন। এই সার্জারির সুফল দীর্ঘস্থায়ী হয়। অ্যাপোলো হসপিটালস চেন্নাইয়ের সিনিয়র কনসাল্টেন্ট অর্থোপেডিক সার্জন ও রোবোটিক নী রিপ্লেসমেন্ট সার্জন ডাঃ মদন মোহণ রেড্ডি জানান, চিরাচরিত নী রিপ্লেসমেন্ট সার্জারির সাফল্যের হার ৯০-৯৫ শতাংশ, কিন্তু রোবোটিক অ্যাসিস্টেড সার্জারিতে ১০০ শতাংশ সাফল্য মেলে।
ডা রেড্ডির মতে, টোটাল নী রিপ্লেসমেন্ট (টিকেআর) যাদের দরকার, তারা আরটিকেআর-এর উপযুক্ত। এইসব রোগীদের অবস্থা বিবেচনা করে চিকিৎসকরা প্রথমে ‘লেস ইনভেসিভ ট্রিটমেন্ট’ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন – যেমন, নন-স্টেরয়ডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ড্রাগ (এনএসআইডি), ওয়েট লস ও এক্সারসাইজ-সহ লাইফস্টাইল মডিফিকেশন, ইন্ট্রা-আর্টিকুলার শটস, ফিজিক্যাল থেরাপি ও নী ব্রেস। এসবে কাজ না হলে টিকেআর প্রয়োজন হতে পারে। প্রথাগত টিকেআর ইমপ্ল্যান্ট ২০-২৫ বছর স্থায়ী হতে পারে, এবং ৬০ বছরের নীচের রোগীদের জন্য তার পরামর্শ দেওয়া অসুবিধাজনক। আরটিকেআর-এর মতো নতুন পদ্ধতিতে এই অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। এখন আরও বেশিসংখ্যায় তরুণ রোগীরা টিকেআর করিয়ে নিজেদের কর্মজীবনে ফিরে যেতে সক্ষম বলে জানালেন তিনি।
ডাঃ রেড্ডি জানান, একটি প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা হল যে, আরটিকেআর-এর ক্ষেত্রে সার্জারি রোবটের মাধ্যমে করা হয়, যদিও তা ঠিক নয়। সার্জন নিজেই সার্জারি করেন, আর তাকে সহায়তা করে রোবোটিক আর্ম। সবকিছু পরিচালনার দায়িত্ত্বে থাকেন সংশ্লিষ্ট সার্জন। অন্যভাবেও টেকনোলজির সাহায্য নিয়ে নিখুঁতভাবে ইমপ্ল্যান্ট সম্পন্ন করা হয়। চিরাচরিত টিকেআর-এর ক্ষেত্রে সার্জন রোগীকে দুই সপ্তাহ পর স্বাভাবিক জীবনে ফেরার অনুমতি দেন, কিন্তু আরটিকেআর রোগীরা একইদিনে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ফিরতে পারেন বলে জানান তিনি।আরটিকেআর পদ্ধতি অনেক উন্নতমানের। তবে রোগীদের উচিত নী রিপ্লেসমেন্টের জন্য সঠিক অর্থোপেডিক সার্জন নির্বাচন করা, যিনি সাফল্যের সঙ্গে এধরণের প্রচুর সার্জারি সম্পন্ন করেছেন। অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সার্জনরা নী রিপ্লেসমেন্টের জন্য প্রত্যেক রোগীর অ্যানাটমি দেখে সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেন, অতি উন্নত রোবোটিক ইনস্ট্রুমেন্টস রোগীদের দ্রুত সুস্থ জীবনে ফেরার সহায়ক হয়।